সাভারে আত্মগোপনে জনপ্রতিনিধিরা, নাগরিক সেবা বিঘ্নিত
গত ৫ আগস্ট সরকার পদত্যাগের পর ঢাকা সাভারের অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি গা ঢাকা দিয়েছেন। এতে উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না নাগরিকেরা।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গা ঢাকা দেন সাবেক স্বতন্ত্র এমপি ও আশুলিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। পরিবারসহ আত্মগোপনে যান সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীব ও তার ভাই ইউপি চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম সমর।
একই দিন হেমায়েতপুরে রাজীব ও সমরের বাড়ি ও কার্যালয়ে কয়েক দফা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। সাভার মেয়রের পাঁচ তলা বাড়িতেও হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় ওই সব বাড়িতে কেউ ছিলেন না।
এর আগে গত ৪ আগস্ট পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সাভার ছাড়েন সাভার পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল গনি এবং তার ছেলে আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন। একই দিন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আত্মগোপনে যান মেয়রের অপর দুই ছেলে কামরুল হাসান শাহীন ও তুষার।
এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আত্মগোপনে থাকায় নাগরিক সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। তারা ওয়ারিশান সনদ, জন্ম ও মৃত্যুসনদসহ সংশোধিত জন্মনিবন্ধন পেতে নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। অনেকেই এসব সেবার জন্য পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
গত সোমবার ওয়ারিশান সনদের জন্য পাথালিয়া ইউনয়ন পরিষদে গিয়েছিলেন নয়ারহাটের আবদুর রহমান। কিন্তু চেয়ারম্যান না থাকায় তিনি ওয়ারিশান সনদ নিতে পারেননি।
জানতে চাইলে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আমির হোসেন বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতির কারণে চেয়ারম্যান সাহেব নিরাপদ স্থানে রয়েছেন। এ কারণে নাগরিকদের দ্রুত সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে জরুরি প্রয়োজনে তার (চেয়ারম্যান) স্বাক্ষর সংগ্রহ করে নাগরিকদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।’
সাভার পৌরসভায় গিয়ে কথা হয় একজন ঠিকাদারের সঙ্গে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ঠিকাদার বলেন, ‘আমার টাকার খুব প্রয়োজন। কিন্তু মেয়র না থাকায় বিল পাচ্ছি না।’
জানতে চাইলে সাভার পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা সিকদার মো. আব্দুর রব কালের পরিবর্তনকে বলেন, ‘আমাদের পৌরসভায় অধিকাংশ নাগরিক সেবাই চলমান রয়েছে। আমার স্বাক্ষরেই তারা সেবা পেয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু মেয়র না থাকায় সব ধরনের আর্থিক লেনদেন, বিভিন্ন উন্নয়মূলক কাজের অগ্রগতি ও ভবনের প্ল্যান পাস বন্ধ রয়েছে।’
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ্র বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। উপজেলা চেয়ারম্যান পর পর তিন বার পরিষদের সভায় অনুপস্থিত থাকলে তখন নিয়ম অনুযায়ী বিকল্প ব্যবস্থায় সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’