নারায়ণগঞ্জে বহুল আলোচিত সাত খুনের বিচারের রায়ের দাবিতে মানববন্ধন।
নারায়ণগঞ্জে বহুল আলোচিত সাত খুনের বিচারের রায় কার্যকরের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মানববন্ধন করেছেন নিহতদের স্বজনরা।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় নিহতদের স্বজনরা দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানান বর্তমান সরকারের কাছে। মানববন্ধনে নিহতদের পরিবারের স্বজনদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন এলাকাবাসীরাও।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নিহত ব্যক্তিদের পরিবাররের স্বজন ও স্থানীয়রা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ও বিচার বিভাগের কাছে হত্যাকারীদের বিচারের রায় কার্যকরের আবেদন করেন।
এ সময় স্বামী হত্যার বিচারের রায় কার্যকরের দাবি জানিয়ে মামলার বাদী ও নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, ‘আমরা আমাদের স্বজনদের হারিয়েছি ১১ বছর পার হয়ে গেছে। অথচ এখন পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট খুনিদের ফাঁসি দেননি। বিচার বিভাগ ও অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের কাছে আমাদের একটাই দাবি, অন্তত আমাদের ৭ টা পরিবারের চিন্তা করে বিচার কার্যক্রম শেষ করা হোক। আমি আইন উপদেষ্টার প্রতি আবেদন করছি যে, আমরা ৭টা পরিবার কর্তাহারা হয়েছি। আমাদের অবস্থা বিবেচনা করে সুপ্রিম কোর্টের বিচার কার্যক্রম শেষ করে দ্রুত মামলাটা নিষ্পত্তি করা হোক। আমরা এইটুকু দেখে যেতে চাই।’
নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী সামছুন নাহার নুপুর বলেন, ‘আমার স্বামীর হত্যার সময়ে আমার মেয়ে গর্ভে ছিল। এখন আমার মেয়ের বয়স ১১ বছর। অথচ এখন পর্যন্ত আমার মেয়ে তার পিতা হত্যার বিচার পায়নি। উচ্চ আদালতে মামলা ঝুলে রয়েছে। আমরা প্রধা৷ন উপদেষ্টার কাছে আবেদন করছি যে, অন্তত আমাদেরকে এই হত্যার বিচারটা শেষ করে দেওয়া হোক। আমরা অসহায়।’
নিহত তাজুলের পিতা আবুল খায়ের বলেন, ‘বিগত ১১ বছর আমরা অপেক্ষা করতে এখন ক্লান্ত হয়ে গেছি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা এবং এটর্নি জেনারেলসহ সকলের কাছে আমাদের আকুল আবেদন এই অপেক্ষার পালা থেকে আমাদের রেহাই দেওয়া হোক। উচ্চ আদালতে যেই রায় হয়েছে সেটি দ্রুত কার্যকর করা হোক।’
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক সড়ক থেকে নিহত তৎকালীন প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা এবং আরেক নিহত আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ মোট ৭ জন গুম হন। গুম হবার পরবর্তীতে ঘটনার ৩ দিন পর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে নিখোঁজদের মৃতদের ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিম প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও ভিকটিম চন্দন কুমার সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল দুটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার বিচারিক প্রক্রিয়া বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে চলমান রয়েছে। হাইকোর্ট সংঘটিত হত্যার আসামিদের ফাঁসির রায় বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছেন।